দেশের নাগরিক সংগঠনগুলোর সক্ষমতা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাচ্ছে। আইনী পরিবেশ, আর্থিক সহায়তা ও পরমার্শ প্রদানের ক্ষেত্রে নাগরিক সংগঠনগুলোর ভূমিকা কমিয়ে আনা হচ্ছে।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর বারিধারায় মুভ ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়ে ‘নাগরিক সংগঠনের সক্ষমতা সূচক ২০১৮’ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। সংগঠনটির সভাপতি সাইফুল হকের সঞ্চালনায় প্রতিবেদনের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন প্রোগ্রাম অফিসার তৌহিদা তালেব।
ইউএসএআইডি, এফএইচআই থ্রি সিক্সটি এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর নট ফর প্রোফিট ল’র যৌথ সহায়তায় মুভ ফাউন্ডেশন এই প্রতিবেদন তৈরী করেছে। বিশ্বব্যাপী ৭১টি দেশের নাগরিক সংগঠনের কাজের পরিবেশ ও সক্ষমতা নিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশ অংশে ২০১৮ সালে সার্বিক সূচক হ্রাস পেয়ে ৩.৮ হয়েছে, যা ২০১৭ সালে ছিল ৩.৭। আইনী পরিবেশ, আর্থিক সহায়তা এবং অ্যাডভোকেসির ক্ষেত্রে সূচক উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। বিভিন্ন নিবন্ধন সংস্থার মধ্যে সমন্বয় ও জবাবদিহিতার অভাবে সরকারী নিবন্ধনের ক্ষেত্রে নাগরিকসংগঠনগুলো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
পাশাপাশি প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২০১৮’র মতো কঠোর আইন নাগরিক সংগঠনগুলোকে অ্যাডভোকেসিতে ভূমিকা রাখার সুযোগ কমিয়ে দিচ্ছে। মোট ৭ পয়েন্টের মধ্যে যত কম পয়েন্ট থাকবে সক্ষমতার পরিবেশ তত বৃদ্ধি পাবে।
আইনী পরিবেশ সূচক ২০১৪ সালে ৪ থাকলেও তা ২০১৮ সালে ৪.৭ হয়। নাগরিক সংগঠনগুলোর প্রতি নতুন আইন না হলেও বৈদেশিক অর্থায়ন আইনের মাধ্যমে এনজিও গুলোকে পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তবে সাংগঠনিক সক্ষমতা বরাবরের মতই ৩.২ সূচকে রয়েছে। আর্থিক কর্মসক্ষমতা ২০১৪ সালে ৪ সূচক থাকলেও ২০১৮ সালে ৪.৪ হয়। আর ২০১৪ সালে পরামর্শকের সূচক ৩.২ থাকলেও বর্তমানে তা ৩.৭ রয়েছে।
সেবা বিধানের ক্ষেত্রে ২০১৪ সালে ৩.১ থেকে উন্নীত হয়ে ২০১৮ সালে ৩.২ হয়। খাত ভিত্তিক অবকাঠামোতে ২০১৪ সালে সূচক ৩.৫ থাকলেও ২০১৮ তে তা ৩.৬ হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যক্তি ইমেজে ২০১৪ সালে ৩.৪ সূচক থাকলেও তা বৃদ্ধি পেয়ে ৩.৮ সূচক হয়।
এ ছাড়া দাতাদের অধিকাংশ তহবিল রোহিঙ্গাদের ত্রাণের কাজে চলে যাওয়া, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হওয়া এবং সরকারের আত্মনির্ভরশীল মনোভাবের কারণে আর্থিক সংকট চলছে নাগরিক সংগঠনগুলোর। এ ছাড়া, নাগরিক সংগঠনের ব্যাপারে মানুষের মিশ্র প্রতিক্রিয়ার বিষয়টিও উঠে আসে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে ইউএসএআইডি, আইআরআই, এশিয়া ফাউন্ডেশন, ব্র্যাক, সিপিজে, নাগরিক উদ্যোগসহ বিভিন্ন এনজিও এবং তরুণ মানবাধিকার কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
To Read the News : Click
Leave a Reply